স্থায়ী ক্যাম্পাস নাই। ১১ বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি কার্যক্রম বন্ধ।

স্থায়ী ক্যাম্পাস নির্মাণে কোনও ধরনের উদ্যোগ না নেয়ায় থাকায় দেশের ১১ বেসরকারী বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি কার্যক্রম বন্ধ করে দেয়ার যৌথ সিদ্ধান্ত নিয়েছে আইনমন্ত্রনালয় ও বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় মন্জুরী কমিশন ইউজিসি। সেইসাথে সর্বমোট ৩২টি বিশ্ববিদ্যালয়কে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেয়ারও সিদ্ধান্ত নিয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। রবিবার ২৫ ফেব্রুয়ারি শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে উচ্চপর্যায়ের এক বৈঠকে এ সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের সচিব।

মন্ত্রণালয় ও ইউজিসি সূত্রে জানা গেছে, নিয়ম অনুযায়ী নিজস্ব ক্যাম্পাসে ফেরত না যাওয়াসহ আইন মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনা না মানায় দেশে ৩২টি বিশ্ববিদ্যালয়কে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেয়া হবে। এসব বিশ্ববিদ্যালয়ের মধ্যে ইউনিভার্সিটি অব ডেভেলপমেন্ট অল্টারনেটিভ (ইউডা), বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটি, রয়েল ইউনিভার্সিটি অব ঢাকা, ভিক্টোরিয়া ইউনিভার্সিটি অব বাংলাদেশ, আশা বিশ্ববিদ্যালয় বাংলাদেশ, ইউনিভার্সিটি অব সাউথ এশিয়া, প্রাইম এশিয়া ইউনিভার্সিটি, স্টামফোর্ড ইউনিভার্সিটি বাংলাদেশ, স্টেট ইউনিভার্সিটি অব বাংলাদেশ, এবং প্রিমিয়ার বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি কার্যক্রম বন্ধ করা হবে ইউজিসির সুপারিশ অনুযায়ী। মন্ত্রণালয়ে বৈঠক করে এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। তবে মন্ত্রণালয়ের সংশ্লিষ্ট শাখা থেকে জানানো হয় মোট ১২টি বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি কার্যক্রম বন্ধের সিদ্ধান্ত নেয়া হয় বৈঠকে। অপরটির নাম জানায়নি মন্ত্রণালয়ের সংশ্লিষ্ট শাখা।

মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের সচিব মো. সোহরাব হোসাইন সাংবাদিকদের জানান, দেশের ৫১ বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের মধ্যে ১৯টি স্থায়ী ক্যাম্পাসে তাদের কার্যক্রম শুরু করেছে। কিন্তু বাকি ৩২টির মধ্যে ১২টি ন্যূনতম কোনও উদ্যোগ নেয়নি। ওইসব প্রতিষ্ঠানে ছাত্রছাত্রী ভর্তি বন্ধ করে দেয়া হবে। তবে এই কঠোর সিদ্ধান্ত নেওয়ার আগে তাদের কাছ থেকে ব্যাখা চাওয়া হবে। কেনও তারা (কর্তৃপক্ষ) শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনা ও আইনের বিধান প্রতিপালন করেনি।’

সচিব আরও জানান, এই সিদ্ধান্তের জন্য ভর্তি হওয়া ছাত্রছাত্রীদের কোনও ক্ষতি বা সমস্যায় পড়তে হবে না। তারা শিক্ষাজীবন অব্যাহত রাখতে পারবে। ভর্তি হওয়া বিশ্ববিদ্যালয়েই তারা লেখাপড়া করতে পারবে।’
বৈঠক সূত্রে জানা গেছে, স্থায়ী ক্যাম্পাসে না যাওয়া, বার্ষিক নিরীক্ষা প্রতিবেদন না দেওয়াসহ আইনের বিভিন্ন দিক লঙ্ঘন করা বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর কাছেও ব্যাখা চাওয়া হবে। সন্তোষজনক জবাব দিতে না পারলে মন্ত্রণালয় ও ইউজিসি থেকে পাঠানো পত্রের নির্দেশনা অনুযায়ী ওইসব প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের একটি সূত্র জানায়, স্থায়ী ক্যাম্পাসে কার্যক্রম পরিচালনা সংক্রান্ত অপরাধে জড়িত রয়েছে দেশের ৩২টি বিশ্ববিদ্যালয়। কিন্তু আয়-ব্যয়ের নিয়মিত নিরীক্ষা না করানোসহ প্রতিবেদন জমা না দেওয়ার অপরাধে আরও কিছু বিশ্ববিদ্যালয় জড়িত। ওইসব বিশ্ববিদ্যালয়কেও কারণ দর্শানোর নোটিশ দেওয়া হবে।
বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর বিরুদ্ধে এসব ব্যবস্থা নেওয়ার বিষয়ে মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের সচিব মো. সোহরাব হোসাইন বলেন,‘প্রত্যেকটি বিশ্ববিদ্যলয়ের হালনাগাদ অবস্থা আমাদের কাছে আছে। আমরা তা পর্যালোচনা করছি। কোনও বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ করে দেওয়া আমাদের উদ্দেশ্য নয়। কিন্তু সবাইকে আইনের অধীনে আসতে হবে। মানসম্মত শিক্ষা নিশ্চিত করতে হবে। এটা নিশ্চিতের পর কেউ ব্যবসা করলে করতে পারেন। কিন্তু বেপরোয়াভাবে কাউকে চলার সুযোগ দেওয়া হবে না।’

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *